নিউজপশ্চিমবঙ্গ

We want justice: আর জি কর হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ চলছে

We want justice

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আর জি কর হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ চলছে। এসব বিক্ষোভে ক্ষমতাসীন দলগুলোর দিকে আঙুল তুলছেন অংশগ্রহণকারীরা। সোমবারও ভারতজুড়ে হাজার হাজার চিকিৎসক রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বিক্ষোভ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা অস্বীকার করেন। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরাও দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তাদের হাতে নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

এর আগে গত শনিবার ভারতজুড়ে চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করেন। নারী মানবাধিকার কর্মীরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, দায়িত্ব পালনরত চিকিৎসককে এভাবে ধর্ষণ ও হত্যা প্রমাণ করে ২০১২ সালে কঠোর আইন করার পরও কীভাবে নারীরা ভারতে যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এরই মধ্যে চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে বলেছে। পাশাপাশি তারা স্বাস্থ্যসেবায় অংশ নেওয়াদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার উপায় বের করতে একটি কমিটিও করেছে।

আর জি কর হাসপাতালের বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের মুখপাত্র ড. অনিকেত মেহতা বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল এ কর্মবিরতি চলবে।’

চিকিৎসকদের এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রোববার হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বিক্ষোভ করেন। তারা ‘আমরা বিচার চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ ছাড়া ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি, উড়িষ্যা ও গুজরাটে বিপুল সংখ্যক ইন্টার্ন চিকিৎসক বিক্ষোভ করছেন।

গত ৮ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরদিন তার অর্ধনগ্ন শরীর হাসপাতালের একটি নির্জন কক্ষে পাওয়া যায়। দ্য হিন্দু অনলাইন জানায়, সোমবার চতুর্থ দিনের মতো হাসপাতালটির সাবেক প্রিন্সিপাল সুদীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তবে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তারা।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের পরিচয় তুলে ধরা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তারা একজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।

We want justice আরজি কর হাসপাতাল

চলমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মঙ্গলবার ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে তিনি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, মৌমিতাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সিবিআইর তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন; দোষীর ফাঁসি চেয়ে স্লোগান তুলেছেন। আন্দোলনকে সমর্থন করেও তিনি চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তা কাজে দেয়নি। এটাকে ইস্যু করে মমতা সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে বিজেপি। সে কাজ এগিয়ে দিতে কাজ করছেন রাজ্যপালও।

আন্দোলনে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপি চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা দোষীদের রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ধর্ষণ-হত্যার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আন্দোলন সরকারবিরোধী রূপ নিতে যাচ্ছে। এতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র– উভয়ের ভিত নড়তে পারে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৌমিতার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়, ওই চিকিৎসককে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তাঁর মাথা, গাল, ঠোঁট, নাক, ডান চোয়াল, চিবুক, গলা, বাঁ হাত, বাঁ কাঁধ, বাঁ হাঁটু, গোড়ালি ও যৌনাঙ্গে একাধিক ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। নিহত মৌমিতার ফুসফুসে রক্ত জমাট (হেমারেজ) বেঁধেছিল। শরীরের আরও কিছু অংশেও রক্ত জমাট বাঁধে।

Shares: