গোটা দেশ বর্তমানে যে ঘটনায় প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে সেই আরজি কর হাসপাতালের (Rg Kar Hospital) প্রতিষ্ঠাতার জন্মবার্ষিকী ছিল শুক্রবার। হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা রাধাগোবিন্দ করের জন্মদিনটি সাধারণত সাড়ম্বরেই পালন করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। এক মর্মান্তিক নারকীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে আরজি করের জন্মদিন পালিত হল শোকের আবহে।
এদিন মূল প্রশাসনিক ভবনে আরজি করের মূর্তিতে মাল্যদান করেই পালিত হয় আরজি করের জন্মবার্ষিকী। এ বছর আন্দোলন-মঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারেরা রাধাগোবিন্দ করের ছবিতে মাল্যদান করেন। এক আন্দোলনকারী ডাক্তারের কথায়, ”রাধাগোবিন্দ কর সারাটা জীবন ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানের জন্যে। অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধেও তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জীবিত থাকলে হয়তো আন্দোলনের মঞ্চে এসে আমাদের পাশে দাঁড়াতেন।”
অন্যদিকে শুক্রবার তাঁর জন্মদিনে হাসপাতালের পাশাপাশি হাওড়ার বেতড়ের বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনেরা এসেছেন। ফুলমালা দিয়েছেন রাধাগোবিন্দের ছবিতে। কিন্তু সকলেই শোকস্তব্ধ। আরজি করে (Rg Kar Hospital) মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রত্যাশিত ভাবেই আলোড়িত কর পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই তার ছাপ পড়েছে রাধাগোবিন্দের জন্মদিন উদ্যাপনেও। এ প্রসঙ্গে পরিবারের সদস্য গার্গী কর বলেন, ‘‘আরজি করের ঘটনা আমাদের খুবই পীড়া দিয়েছে। উনি (রাধাগোবিন্দ) তিল তিল করে যে হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন, সেটাকে কী ভাবে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে! এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় যে ভাবে রাধাগোবিন্দ করের নাম জড়িয়ে গিয়েছে, তাতে আমরা ভীষণ ব্যথিত। চোখ থেকে জল-রক্ত না বেরোলেও আমার ভিতরে কিন্তু রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম থেকেই সরব কর পরিবার। দোষী বা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত ১৪ অগস্ট কলকাতা শহরে মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিতেও শামিল হয়েছিল তারা।
প্রসঙ্গত, আরজি করের (Rg Kar Hospital) তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার দু’সপ্তাহ হয়ে গেলেও এই মামলায় শুধুমাত্র সঞ্জয় রায় নামের সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু নতুন কাউকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি সিবিআই। এই তদন্তের অগ্রগতি কতদূর? তা-ও স্পষ্ট নয় নির্যাতিতার পরিবার ও আন্দোলনকারীদের কাছে। সব কিছুতেই মিশে রয়েছে ধোঁয়াশা।